বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৫

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

দুই মাসে ডিপোর্ট ২ লক্ষ

ট্রাম্প চান গণডিপোর্ট নারাজ কর্মকর্তারা

নবযুগ ডেস্ক 

প্রকাশিত: ০১:৩৯, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ট্রাম্প চান গণডিপোর্ট নারাজ কর্মকর্তারা

প্রতীকী ছবি

ভোর হওয়ার আগেই অভিবাসী কর্মকর্তারা দোতলা একটি ভবনের কাছে তাদের গাড়িতে বসেছিলেন। অদূরেই নিউইয়র্কের কেটি সাবওয়ে লাইন। হঠাৎ করেই রেডিওতে এক অফিসারের কণ্ঠ শোনা গেল।

প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নজরদারির পর তিনি বললেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ওটাই টাঙ্গো।’ টার্গেট করা লোকটির ব্যাপারে এই পরিভাষাই তিনি ব্যবহার করলেন। ‘ধূসর হুডি, ব্যাকপ্যাক, দ্রুত হাঁটছে।’
অভিবাসী কর্মকর্তারা দ্রুত ইকুয়েডর থেকে আসা ২৩ বছর বয়স্ক লোকটিকে ঘিরে ফেলে হাতকড়া পরিয়ে দিলেন। লোকটির বিরুদ্ধে এক শিশুকে যৌন হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে।
নিউইয়র্কের এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড রিমোভাল অপারেশন্স ফর ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের প্রধান কেনেথ জেনালে বলেন, এমন ভুল ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচলিত রয়েছে যে অফিসাররা সমাজের সাথে মিশে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত লোকদের পাকড়াও করে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে।
তিনি বলেন, ‘একে বলে টার্গেটেড এনফোর্সমেন্ট।’ তিনি জানান, ‘আমরা লোকজনকে ধরে জেএফকে-এ নিয় গিয়ে বিমানে উঠিয়ে দিতে পারি না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরছেন। ফলে গণডিপোর্টসহ তিনি তার অভিবাসন অ্যাজেন্ডা কিভাবে রিপাবলিকানরা বাস্তবায়ন করবে, তা দেখার জন্য ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব যাদের, তারা এই বিপুল কাজ কতটুকু করতে পারবেন, সেটাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। কারণ, তাদের কাছে আগেই গ্রেফতার করার তালিকা ছিল। এখন এই তালিকা বড় হবে। ফলে কাজ সামাল দেওয়া সহজ হবে না।
বাইডেন প্রশাসন নিরাপত্তার প্রতি হুমকি এবং সম্প্রতি সীমান্ত অতিক্রমকারীদের ডিপোর্টের তালিকায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাখার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের আসন্ন ‘বর্ডার জার’ টম হোম্যান এই তালিকায় সম্ভাব্য ঝুঁকি সৃষ্টিকারীদেরও রাখতে চাচ্ছেন। তিনি পরিকল্পনা করছেন, এসব লোককে আদালতে হাজির করার আগেই দেশ থেকে বিদায় করে দিতে।
কিন্তু কাজটি কি সহজ হবে? প্রায় ১.৪ মিলিয়ন লোক উচ্ছেদের চূড়ান্ত নির্দেশ পেয়েছেন। আর ছয় লাখ ৬০ লাখ লোক নজরদারিতে রয়েছেন। তারা অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বা অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। এসব অপরাধীর বিষয়টি দেখাশোনার জন্য আইসিইতে কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র ছয় হাজার। সংখ্যাটি প্রায় এক দশক ধরে একই রয়েছে। এবার গত বছর যখন সীমান্তে অভিবাসনের ঢল নেমেছিল, তখন তাদেরকে নিয়মিত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে নেওয়া হয়।
ফলে এই খাতে জনবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা ফুটে ওঠেছে। বাইডেন প্রশাসনের প্রথম দিকের আইসিই প্রধান জ্যাসন হাউসারও একই কথা বলেন। আটক করার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়াও আছে নানা সমস্যা। অর্থাৎ কাজটি সহজ নয়।
আইসিই গত  মাসে দুই লাখ  হাজারের বেশি লোককে ডিপোর্ট করেছে। এক দশকের মধ্যে এটিই বার্ষিক সর্বোচ্চ সংখ্যা। তবে এদের মধ্যে অ-নাগরিকের সংখ্যা কম। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, সীমান্তে অনেক অফিসারকে পাঠানোর কারণে তাদের নিয়মিত কাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে ট্রাম্পকে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সমস্যার মুখেই পড়তে হচ্ছে।

শেয়ার করুন: