
ছবি: সংগৃহীত
নিউজার্সির ওশেন কাউন্টির বারনেগেট টাউনশিপে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে গেছে অন্তত ৩ হাজার ২০০ একর বনভূমি। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দাকে বাধ্যতামূলকভাবে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হয়েছে। নিউজার্সি ফরেস্ট ফায়ার সার্ভিস এই দাবানলের নাম দিয়েছে ‘জোনস ওয়াইল্ডফায়ার’। এই দাবানল প্রথম দেখা দেয়, গ্রিনউড ফরেস্ট ওয়াইল্ডলাইফ ম্যানেজমেন্ট এরিয়ায়। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ওয়ারেটাউন ও লেসি টাউনশিপ পর্যন্ত।
আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ শতাংশ আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩২০টি বসতবাড়ি ও স্থাপনা। যেগুলো যে কোনো সময় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে প্রশাসন দ্রুত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু এলাকায় বাধ্যতামূলক উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে।
জানা গেছে, ব্রায়ান্ট রোড থেকে গার্ডেন স্টেট পার্কওয়ে পর্যন্ত ওয়েলস মিলস রোড, লেসি টাউনশিপের ফেজান্ট রান ও বারনেগাট পাইন্স সাউথ সেকশন এবং ক্লুন পার্কের আশপাশের বেশ কিছু আবাসিক এলাকা ইতোমধ্যে উচ্ছেদ করা হয়েছে। স্থানীয়দের জন্য ম্যানাহকিনের সাউদার্ন রিজিওনাল হাই স্কুল এবং ম্যানচেস্টার টাউনশিপ হাই স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সাউদার্ন রিজিওনাল হাই স্কুলে পোষ্যসহ আশ্রয় নেওয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে।
দাবানলের কারণে গার্ডেন স্টেট পার্কওয়ের এক্সিট ৬৩ থেকে ৮০ পর্যন্ত উভয়মুখী লেন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আশপাশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচলে বিঘœ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এক্সিট ৬৯ পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে মানুষ দ্রুত উচ্ছেদের নির্দেশ পালন করতে পারে।
এদিকে, বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ওশেন কাউন্টি কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করেছে। দাবানল থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করছে। আগুনের বিস্তার ঠেকাতে কাজ করছে দমকল বাহিনীর একাধিক ইউনিট। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে জেসিপি অ্যান্ড এল। কোম্পানিটি জানিয়েছে, অয়েস্টার ক্রিক সাবস্টেশন থেকে সংযুক্ত প্রায় ২৩ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রধান কারণ হিসেবে আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতিকে দায়ী করা হয়েছে। শুকনো ও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার কারণে আগুন মুহূর্তেই নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, যা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
স্থানীয় প্রশাসন বারবার অনুরোধ জানাচ্ছে, বাসিন্দারা যেন সরকারি নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করেন এবং উচ্ছেদের আওতায় পড়া এলাকা দ্রুত ত্যাগ করেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন প্রশাসনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।