শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৫

সাপ্তাহিক নবযুগ :: Weekly Nobojug

৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

‘একতরফা নির্বাচন বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে ফেলবে’

ঢাকা অফিস

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ২০ নভেম্বর ২০২৩

‘একতরফা নির্বাচন বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে ফেলবে’

ফাইল ছবি

তফসিল ঘোষণা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনকে একতরফা উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিক।সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ উদ্বেগ জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি— সরকার সম্প্রতি আরও একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর অংশ হিসেবে ২৮ অক্টোবর-পরবর্তী সময়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অজস্র মামলা দায়ের করা হচ্ছে, তাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনাও নাকচ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।’

‘এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সরকারের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা অতীতের দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি— একতরফা, বিতর্কিত ও সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক জবাবদিহিতা থাকে না; রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তাই আরও একটি বিতর্কিত এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে নিপতিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

‘এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে তাদের এবং অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে সংলাপের পথ উন্মুক্ত রাখার স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা মনে করি— অতীতের একতরফা নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পরও দেশি-বিদেশি নানা মহলের সংলাপের আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার যদি আরও একটি অনুরূপ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে।’

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন

১. আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক কেবিনেট সচিব
২. আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক
৩. স্বপন আদনান, ভিজিটিং প্রফেসর, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স
৪. দিলারা চৌধুরী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক
৫. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী
৬. শিরিন হক, মানবাধিকার কর্মী, 
৭. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৮. সামিনা লুৎফা নিত্রা, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৯. রেহনুমা আহমেদ, লেখক
১০. নূর খান লিটন, মানবাধিকার কর্মী 
১১. অরূপ রাহী, চিন্তক
১২. রাখাল রাহা, লেখক ও সম্পাদক
১৩. মাহবুব মোর্শেদ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
১৪. সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
১৫. মির্জা তসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 
১৬. রায়হান রাইন, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
১৭. সায়েমা খাতুন, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী
১৮. আ-আল মামুন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৯. সাখাওয়াত টিপু, কবি
২০. তবারক হোসেইন , সিনিয়র অ্যাডভোকেট 
২১. সুব্রত চৌধূরী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট
২২. হানা শামস আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী
২৩. নায়লা জামান খান, চিকিৎসক ও সমাজকর্মী
২৪. ড. মোশরেকা অদিতি হক, সহযোগী অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
২৫. সায়দিয়া গুলরুখ, সাংবাদিক
২৬. রেজাউর রহমান লেনিন, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী
২৭. ড. মারুফ মল্লিক, লেখক
২৮. মাইদুল ইসলাম, পিএইচডি গবেষক, ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ, যুক্তরাষ্ট্র
২৯. নাসরিন খন্দকার, নৃবিজ্ঞানী
৩০. এহ্সান মাহমুদ, কথাসাহিত্যিক 
৩১. মাহা মির্জা, লেখক ও গবেষক
৩২. বাকি বিল্লাহ, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী
৩৩. মনির হায়দার, রাজনৈতিক ভাষ্যকার 
৩৪. অমল আকাশ, শিল্পী ও সংগঠক
৩৫. আর রাজী, সহকারী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় 
৩৬. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, কথাসাহিত্যিক
৩৭. ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, সঙ্গীতশিল্পী
৩৮. লতিফুল ইসলাম শিবলী, গীতিকবি
৩৯. ফেরদৌস আরা রুমী, কবি ও উন্নয়নকর্মী
৪০. রোজিনা বেগম, মানবাধিকার কর্মী
৪১. সাঈদ বারী, প্রকাশক
৪২. ড. সাদাফ নূর, গবেষক, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য
৪৩. মুহাম্মদ কাইউম, চলচ্চিত্র নির্মাতা
৪৪. জিয়া হাশান, লেখক
৪৫. আসিফ সিবগাত ভূঞা, লেখক
৪৬. জি এইচ হাবীব, সহকারী অধ্যাপক,  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
৪৭. ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর তমাল, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন: