ছবি: সংগৃহীত
জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) আয়োজনে পালিত হলো পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স:)। গত ১৬ সেপ্টেম্বও, সোমবার জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মাহফিল থেকে বাংলাদেশে উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী কর্তৃক মাজার ভাঙ্গার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত চলছে। একটি গোষ্ঠী বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্রের কালিমা লেপন করবার চক্রান্ত করছে।
আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য এবং জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ ধর্ম উপদেষ্টার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, পত্র পত্রিকায় দেখেছি উগ্র মৌলবাদী আহলে হাদিসের আলেমদের সাথে এই ধর্ম উপদেষ্টার মাখামাখি। এই উগ্রবাদী আহলে হাদিসের আলেমরা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র জনতার আন্দোলনকে নাজায়েজ এবং কুফরি বলে হুংকার দিয়ে আন্দেলনকে দমন করতে চেয়েছিল। এই উগ্রবাদী আহলে হাদিসের আলেম ওলামারা পতিত স্বৈরাচার সরকারের সাথেও সখ্যতা রেখে ফায়দা হাসিল করেছে। ওলি আওলিয়াদের মাজার ভাঙ্গার দায় নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন গিয়াস আহমেদ।
এই মাহফিলের সভাপতিত্ব এবং আখেরী মুনাজাত করেন আহলে বাইত জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি ডঃ সাইয়েদ মুতাওয়াককিল বিল্লাহ রব্বানী বদরপুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) সভাপতি গিয়াস আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডঃ সাইফুল আজম বাবর আল আজহারী, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুফতি ডঃ সৈয়দ আনসারুল করিম আজহারী, গেস্ট অব অনার হিসেবে যথাক্রমে আল্লামা সুফি আব্দুল মুনতাকিম, লন্ডন; মওলানা হেলাল উদ্দিন সিরাজী, জার্মান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ মওলানা মুহাম্মদ এমদাদুল হক, মোওলানা ইমাম কাজী কাইয়্যুম, মুফতি হাফেজ কাওছার আহমেদ, ফাহাদ সোলায়মান, সেলিম হারুন, মাওলানা রহমান। না’ত ও গজল পরিবেশন করেন পাকিস্তান থেকে আগত বিখ্যাত না’ত পরিবেশনকারী হাসান বিন খুরশিদ এবং কারী মুহাম্মদ ফারুক । কুরআন তেলাওত করেন সাইয়েদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানী এবং না’ত পেশ করেন হাফেজ টিপু রহমান।
বক্তাগণ আরো বলেন, আল কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (সাঃ) কে আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা সুরা ইউনুস এর ৫৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির জন্য মুমিনদেরকে খুশি এবং ঈদ উৎযাপন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ আরো বলেছেন, এই ঈদ উৎযাপন হবে মুমিনদের সকল কর্ম ফলের চেয়ে শ্রেষ্ঠতর।
বক্তারা আরো বলেন, যুগ যুগ ধরে বিশ্বের সকল দেশেই ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী ঈদে মিলাদুন্নবী সাঃ এর বিরোধিতা করে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে চলেছে। ফলে মুসলিম সমাজ আজ বহুধা ভাগে বিভক্ত। এক আলেম অন্য আলেমের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। অন্যদিকে ইসলামের শত্রুরা বিনা বাধায় তাদের চক্রান্ত সফলভাবে সম্পন্ন করে চলেছে। বক্তাগণ এই পথভ্রষ্ট উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান। জিকির আজকার, জোনাজাত এবং নৈশভোজের মাধ্যমে ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।