
ছবি: সংগৃহীত
এটা কোন কথা, বিনা বিচারে, বিনা বাঁধায় মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে! কি ভয়াবহ এক সংস্কৃতি চলছে দেশময়। প্রশাসন, আইন, বিচার কিছু আছে বলে তো মনে হচ্ছে না। কেউ কাউকে মানছে না। মানুষ কি চব্বিশের ডামাডোলে বিচার, বুদ্ধি, বোধ সব হারিয়ে ফেলল? ভাবা যায় যে কারো মনে হল আপনাকে বা আমাকে মেরে ফেলবে, আর দিনে দুপুরে ঘটা করে সর্বসমক্ষে সাপ পিটিয়ে মারার মত আপনাকে, আমাকে মেরে ফেলল!
কি ভয়াবহ বিষয় ভাবুন, কোন কারন ছাড়াই অকাতরে মানুষ মারছি আমরা। কেউ কোন অপরাধ করলে তাতো প্রমাণিত হতে হবে কিংবা বিচার হতে হবে। এবং তার জন্যতো আইন আদালত আছে। এ কথা স্বীকার করছি যে দীর্ঘদিন সুবিচার, সুশাসন দেখেনি মানুষ। তাই আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। কিন্তু এটাও তো সত্য যে সরকারের ব্যর্থতা বা অদক্ষতা সাধারন মানুষকে অতিষ্ট করে তুলেছে বলে কেউ কেউ হতাশ হয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকা- করছে এবং সন্ত্রাসীরা সুযোগও নিচ্ছে।
কিন্তু এসব তো থামাতে হবে। এমন মব জাস্টিস তো কোন সমাধান নয় বরং অপরাধ অপকর্ম বেড়েই চলেছে। দেশে এখন একটি অরাজনৈতিক সরকার। আমজনতা চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। তারা করছেটা কি বা দেশে হচ্ছেটা কি! মনেতে হচ্ছে তাদেরই আশ্রয়, প্রশ্রয়, উদাসীনতায় এসব ঘটে চলেছে বৈকি! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপদেষ্টাগণ তো বলছে দেশে অপরাধ বাড়েনি, এমনকি ডক্টর ইউনুসও বলছেন আইন-শৃঙ্খলা ভালোর দিকে! কিন্তু মানুষ তো দেখতে পাচ্ছে তার উল্টোটা। তবে তো বর্তমান শাসনকর্তারা মিথ্যাই বলছে, সেই পুরোনো তাল লয়ে। প্রতিপক্ষকে বা আওয়ামী লীগকে দমন করতে ইউনুস সাহেবের এবং তার মদদপুষ্ট ছাত্রদের, বিভিন্ন বাহিনীদের কিংবা উপদেষ্টাদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার্থে মব সংস্কৃতি চালু করা হলো এবং যা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে মব কালচার তাদের জন্য বুমেরাং হয়ে গেছে। তারা এখন আর মব নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। যে কারনে সারাদেশ আতংকিত। আর এই মব সংস্কৃতিকে উপলক্ষ করে সন্ত্রাসীরা নেচে নেচে অপরাধ করছে। ভাঙছে, আগুন দিচ্ছে, মারছে, লুটপাট, ধর্ষণ, কি না করছে।
উপদেষ্টাগন এসব কালিমা ঢাকতে কথায় কথায় শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগকে দায়ী করছে। এটা তো পুরনো কাসুন্দি। শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার আমলেও তারা একে অন্যকে ঘায়েল করা বা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণে তাই করতো। হোমো এরশাদের কথা নাইবা বললাম। দয়া করে উদোর পিন্ডি বুদুর ঘাড়ে না চাপিয়ে আপনারা কিছু করে দেখান। মানুষের তো ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এ খেলা বন্ধ না হলে, যে কেউ যখন তখন মরবে। এই মরণ খেলা আর নিতে পারছে না মানুষ। জনজীবন থেকে এই মববাদ অচিরেই বিলুপ্ত হবে তাই প্রত্যাশা করছি। কবি গুরুর পংতি দিয়ে শেষ করছি-‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভূবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই।