ফাইল ছবি
অবারিত সম্ভাবনার এই দেশের একজন অভাবনীয় রাষ্ট্র নায়কের নাম শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যিনি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাইরে বিশাল সমুদ্রে বাংলাদেশের যে অপরিমেয় সমৃদ্ধি লুকিয়ে রয়েছে সেটি প্রথম অনুধাবন করেছিলেন। তার হাত ধরেই মূলত দেশের সমুদ্র অর্থনীতি তথা আজকের ব্লু-ইকোনমির যাত্রা শুরু। আলোচনার গভীরে প্রবেশের আগে সমুদ্র অর্থনীতি কি সে বিষয়ে কিছুটা ধারণা উল্লেখ করা হলো।
সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লুু-ইকোনমি হচ্ছে সমুদ্র সম্পদনির্ভর অর্থনীতি। সাগরের জলরাশি ও এর তলদেশের বিশাল সম্পদকে কাজে লাগিয়ে একটি দেশের মোট সম্পদের সমৃদ্ধি অর্জন। সে হিসেবে বাংলাদেশের জন্য সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০১২ সালের ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের (পিসিএ) রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মামলায় মোট প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি সমুদ্র এলাকার দখল পায় বাংলাদেশ। সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের জন্য ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সমুদ্র এলাকা, ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল সীমানা এবং মহীসোপানে বাংলাদেশ তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৮ জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ সমুদ্র সীমানার আনুমানিক ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটারের অধিকার পায় বাংলাদেশ। এতে করে বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে উত্তরণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সামুদ্রিক সম্পদের গুরুত্ব ও অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়।
আজকে যখন আমরা সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে নানামুখী আলোচনা করছি তখন সব থেকে বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এ বিষয়টি জানতে হলে আমাদের দৃষ্টি ফেরাতে হবে ১৯৮১ সালের ১৯ থেকে ২১ জানুয়ারির ঘটনা প্রবাহে। সে সময় তিনি দেশের সেরা ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী এবং এক দল বিজ্ঞানীকে সঙ্গে নিয়ে সমুদ্রগামী যাত্রীবাহী জাহাজ ‘হিযবুল বাহার’-এ চড়ে বঙ্গোপসাগরে একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা সফর তথা সমুদ্র অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিকল্পনা ও উদ্যোগে ‘সামুদ্রিক সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি’র আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো দেশের সেরা ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বঙ্গোপসাগরকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। বঙ্গোপসাগরের সম্পদ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক ধারণা দেওয়া এবং দেশের উন্নয়নে সেই সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করা।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সেরা ছাত্র-ছাত্রী ও বিজ্ঞানীদের নিয়ে দুই রাত, এক দিন বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করেন। এর আগে তার নির্দেশে সরকার সামুদ্রিক সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, শিপিং মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর, জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, পেট্রোবাংলা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ‘জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়। যে কমিটির প্রতিনিধিরা এর আগে একবার সমুদ্রে অভিযান পরিচালনা করে।
রাষ্ট্রপতি জিয়ার সেই অভিযান শুরু হয় ১৯৮১ সালের ১৯ জানুয়ারি। সমুদ্রযাত্রার জন্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে যাত্রীবাহী জাহাজ ‘হিযবুল বাহার’সহ মোট চারটি জাহাজ প্রস্তুত করা হয়। মেধাবী শিক্ষার্থী ছাড়াও অভিযানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান, জাতীয় কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত বিভিন্ন বিষয়ের গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, জনপ্রিয় শিল্পী, রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তাকর্মীসহ কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সফরসঙ্গী ছিলেন।
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন সকাল ১০টায় শুরু হয় জাহাজের ছাদে সমুদ্রযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রপতি জিয়া সমুদ্র অভিযানে অংশগ্রহণকারী সবার কাছে এই অভিযান বা শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি সব ছাত্র-ছাত্রীকে চমকে দিয়ে প্রথমেই তাদের ডানে দেখতে বলেন এবং পরে বাঁয়ে দেখতে বলেন।
শিক্ষার্থীরাও সেনা কমান্ডিংয়ের মতো তার নির্দেশ পালন করে। দৃশ্যটি ছিলো মনোমুগ্ধকর। এরপর সম্পূর্ণ পরিবেশ অংশগ্রহণমূলক ও আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। এসময় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমরা ডানে-বাঁয়ে কী দেখলে?’ এ ধরনের সহজ ও রহস্যময় প্রশ্ন শুনে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা একটু বিস্মিত হলো, থমকে গেল এবং খানিকটা সময় নীরবতার মধ্যে কাটল। দুই দিকেই তো সমুদ্রের পানি ছাড়া আর কিছুই দেখেনি তারা। এটি কি কোনো প্রশ্ন হতে পারে? এটি ভেবে কিছুক্ষণ কেউ কোনো উত্তর দেয়নি। জিয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সাহস দিয়ে জানতে চাইলেন, ‘তোমরা যা দেখেছ তা-ই বলো।’ এরই মধ্যে কয়েকজন হাত তুলল। তিনি একজনকে সুযোগ দিলে সে উত্তর দিল, ‘দুই দিকেই সমুদ্রের পানি দেখতে পেয়েছি।’ রাষ্ট্রপতি জিয়া হেসে ছাত্রটির সঙ্গে সায় দিয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি এটাই জানতে চেয়েছি।’ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চাপা গুঞ্জন, এটি কি কোনো প্রশ্ন হলো? পরমুহূর্তে রাষ্ট্রপতি জিয়া গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, ‘যা তোমরা দেখছ তা শুধু সাগরের পানি নয়, এটা তোমাদের বাংলাদেশ।
এই অপরিচিত বাংলাদেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য, বাংলাদেশের এই অংশের গঠন, অবস্থান, সম্পদ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে অবহিত করা, বাংলাদেশের এত বিশাল পানির অংশ সম্পর্কে ভবিষ্যতে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তোমাদের আজকে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে এসেছি।’ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে রাষ্ট্রপতি জিয়া এক সম্মোহনী কৌশলে নিবিড় সম্পর্ক ও ভাববিনিময়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিলেন। ফলে অংশগ্রহণকারী মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি জিয়ার সান্নিধ্য, তাদের জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকল। উদ্বোধনী ভাষণে রাষ্ট্রপতি জিয়া সংক্ষেপে বঙ্গোপসাগরের পরিধি, গঠন ইতিহাস, পানির ওপর ও পানির অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্তরে মৎস্যসম্পদ এবং তলদেশে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের উজ্জ্বল সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য দেন।
এরপর ওই অভিযানে সমুদ্র সম্পদ নিয়ে সেমিনারসহ আরো অনেক কিছুই হয় যা, সে সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর আগ্রহের সৃষ্টি করে। অভিযানের সমাপ্তি সমাপ্তি পর্বে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম আর আবিস্কারের এক অভুতপূর্ব উদ্দীপনা সৃষ্টি করে দেন। ফলে শিক্ষার্থীসহ অংশগ্রহণকারী সকল বিজ্ঞানী, শিক্ষক সবাই আগামীর বাংলাদেশকে সৃমদ্ধির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ২১ জানুয়ারি বুধবার সকাল ৮টায় ‘হিযবুল বাহার’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে নোঙর করে এবং সমুদ্র অভিযানের সমাপ্তি ঘটে।
জিয়াউর রহমানের মাত্র সাড়ে চার বছরের মেয়াদে বাংলাদেশের কোনো সেক্টরে কাজ করতে বাদ রাখেননি। সমুদ্র অর্থনীতিতে তার যে সূচনাপর্ব সেখান থেকেই পরবর্তী প্রেক্ষাপটের শুরু। উপরন্তু সে সময় উন্নয়ন ও অগ্রগতির যে ধারাবাহিকতা ছিলো সেটি আজ অনেক ক্ষেত্রেই মন্থর। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিন্নপথে প্রবাহিত। তাইতো সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর এতো বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোন অর্থনৈতিক কার্যক্রমই শুরু করতে পারেনি আওয়ামী লীগ সরকার।
২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ‘টুয়ার্ডস এ ব্লু-ইকোনমি: এ পাথওয়ে ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি সমীক্ষাতে বলা হয়েছে, সমুদ্র অর্থনীতির ব্যাপারে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কোনো সমন্বিত নীতি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেনি।
এমনকি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশিদের আকৃষ্ট করার জন্য যে ‘মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভে’ চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তাও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর্যায়ে বারবার আটকে গেছে।
‘সমুদ্র বিজয়’ নিয়ে যতটা মাতামাতি হয়েছে, সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে ততটা উদ্যোগ কিন্তু পরিলক্ষিত হয়নি। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৭ সালে ‘ব্লু-ইকোনমি সেল’ নামে একটি ক্ষুদ্র প্রশাসনিক সেল গঠন ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। যদিও ভারত ও মিয়ানমার বসে নেই। ২০১২ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধের নিষ্পত্তির বছর দুয়েকের মাথায় শুধু গ্যাসের মজুত আবিষ্কারই না, বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষে তাদের ব্লক থেকে গ্যাস তোলাও শুরু করে দেয় মিয়ানমার। যা দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে চীনেও রপ্তানি করছে দেশটি। আর বঙ্গোপসাগরে সরকারি ও বেসরকারি তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো জোর অনুসন্ধান চালাচ্ছে ও বিপুল মজুতের আশা করছে ভারত।
তাহলে বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে-এমন প্রশ্ন উঠছে এখন। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য একসাথে করে বিশ্বব্যাংক একটি হিসাব করে বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্লু-ইকোনমির অবদান ছিল ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা মোট অর্থনীতির মাত্র ৩ শতাংশ।
২০১৯ সালের সর্বশেষ তথ্যে বলা হচ্ছে, মাত্র ৪টি ব্লকে অনুসন্ধানের জন্য বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু একটি কূপও বাংলাদেশ খনন করতে পারেনি। বাকি ২২টি ব্লক স্থবির পড়ে রয়েছে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে উৎপাদন ও ভাগাভাগি চুক্তির আগে মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভে হবে কি হবে না- সেই তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই আমরা এখনো আটকে আছি।
তথ্য বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩২ বর্গকিলোমিটার। এই সমুদ্রসীমা অগাধ প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার কিন্তু বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ এখন পর্যন্ত প্রায় অনাবিষ্কৃত ও অব্যবহৃত। সমুদ্রসম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
আজকে সরকার কেবল দেশের ক্ষমতামূখী রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। বিরোধী দল ও মতের ওপর চূড়ান্ত খড়গহস্ত আওয়ামী লীগ সরকার সমুদ্র সম্পদ আহরণের চেয়ে ‘সমুদ্র বিজয়’ বিষয়টির প্রচারেই বেশি মনোযোগি। উদযানমুখী এই সরকার জনগণের টাকা খরচ করে এটিকে এখন কেবল শো-অফের বিষয়ে পরিণত করেছে। অথচ এই সুনীল জলের মধ্যেই বাংলাদেশের সোনালী ভবিষ্যত লুকায়িত রয়েছে। আগামীতে জাতীয়তাবাদের সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে শহীদ জিয়ার দেখানো পথেই বিশাল এই সমুদ্রে বাংলাদেশের সোনালী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে। ভারত ও মিয়ানমারকে তাদের সীমার মধ্যে রেখে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই রচিত হবে সমৃদ্ধির শক্ত সোপান।
লেখক: মহাসচিব-ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন বাংলদেশ (ইউট্যাব)।
তথ্যসুত্রঃ বিবিসি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল ওশেনোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট(নোয়ামি), বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বিওআরআই) ও বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা।